বাক্‌ ।। ইহিতা এরিনের কবিতা


 

বিয়োগফুল

 

 

কহাকহির নামতা উড়ে গেলে সব ঠোঁট  বিয়োগচিহ্ন।

যেসব ড্রইংরুম এককে যৌথযেন তারা নিঃসঙ্গ কফিন পেয়ালা।

 

প্রপিতার ব্যক্তিগত হাসপাতাল

বিছানায়

সকল নামের বিয়োগচিহ্ন

যোগ হয়

প্রত্যেক নাম ফোটায় বিয়োগফুল।

 

সম্পর্ক,

বাগানের চিবুক থেকে খসে পড়ে লালের চিহ্ন।

মানুষ,

জন্ম থেকেই নিঃশেষ-বিভাজিত বিয়োগজীবী। 

 

 

 

 

গিটারিস্ট আঙুলের ইশারা

 

জলাশ্রিত মাংসাংশ ১তারা, কাছেপিঠে সীমান্ত ওপা তবু পড়া যাচ্ছে জলজ ঝুমঝুমি!

 

       এমন তরলায়িত রাতে দূরের ল্যামপোস্ট খুলছে নুনের স্বাদ, সমদ্বিবাহু ত্রিভূজ তখনও খোলে নি গ্নেয় লাভার বেডরুম!

 

গিটারিস্ট পঞ্চম আঙুলের ইশারায় ঘামেরা খুলছে ৬৪কলার এই মহাবিদ্যালয়!

 

লাভা ও লালার সুতোমিশ্রিত আমাজন বনজপত্রী একটা ম্যাচবক্স ও ড্রপআউট ক্যাচের অভাবে ভুখা রয়ে যাচ্ছে আজও...

 

 

 

 

নীরবের ঘুমঘুঙুর

 

রাত একথালা নেশাতুর নিশিবাদ্য

   বাজছে খলবলিয়ে কিন্তু শব্দ হচ্ছে না

 

নীরবতা; সব কান্নায় চোখের জল জরুরি নয়...

 

         অভিমানে ফেটে পড়ে আঙুরের ঘুমঘুঙুর নাতিদীর্ঘশ্বাস

 

দ্রবীভূত কুয়াশার ঘ্রাণ থেকে ঝরছে ওচানের জরায়ু

 

জলে কোন জল থাকেনা যেমন পায়ে থাকে না পা

 

এমন পাহীন রাতের দরজা খুলতেই চোখেরা সটান দাঁড়িয়ে যেন ওয়াচডগ 

 

 

 

 

 

 

১টি পার্থিব; কয়েকটি অপার্থিব অভিমুখী

 

-এর পাশে শব্দকে শুইয়ে দিলে

নৈঃশব্দ্য দাঁড়িয়ে 

                 অন্ধকারের

চিবুক ছুঁয়ে

সংখ্যার সাথে শব্দবন্ধ

জড়ো করলে ওড়ে ~ পোশাকি তারিখ

জীবনের সাথে তারিখ

সেলাই করলে

                        আলবৎ

সংখ্যা-মৃত্যু

 

আমরা জানি     (মৃত্যু) = (বিয়োগ)

 

মানুষ মূলত অমর; মৃত্যু তার জন্য ইস্যু নয়

করতলে বয়ে যায় মৃত্যুজ অগণন

 

কেননা

জীবিত মানুষের       মৃত্যু-অভিজ্ঞতা নেই

 

 

 

 

 

ঢেউ গোনার পর

 

নাচবা?

নাচ পা...

নাচো নীরবতা!

 

ঢেউবাজনের শর খোলো অথবা ফানাফিল্লাহ বাজাও নুনহাসি;

 

আমি সাঁই গাছ ___

দূরাহত জনসভায় বসে গুনছি সামুদ্রিক হাসির নাদ

 

শুঁড়িখানার জলজ ঢেউ 

                  কোথাও থাকে না কেউ,

 

যেখানে যেখানে পায়ের ছাপ রেখে এসেছো,

সেখানে ফের গেলে মাজার বানাবো;

নাম দেবো ফসিলমাজার

 

বাজাও নীরবতা! নীরবতা নাচো!

 

 

 

 

 

ত‌্যাগ-মঙ্গল

 

ঝিঁঝি। ব্যাঙ। বৃষ্টি।

থ্রিসাম সন্ধ্যা।

অথবা অ-সাম জৈব সারগাম ভরা মরশুমে

প্রমিত প্রেমের সঙ্গীত শোনায় অপরাপর।

 

শুনছি ক্ষুধার্তের ত্রাহী চিৎকার

এই যারা শীল নির্দেশক সমাজ

তাদের কান কি তরঙ্গ সঞ্চারি?

 

ওই উহারা

উন্নাসিক খিদের চিৎকারে সোল্লাসে মুতে দিলো

আহা যৌগ! তার যথার্থ রাসায়নিক সংকেত জানাও।

সারকথাও জানালো, নিদেনপক্ষে মরবে না পানিশূন্যতায়।

 

 

 

 

 

সংলাপিত দৃশ্যের পাটাতন

 

কেন্দ্র থেকে প্রান্ত সরেসরে 

       যাত্রা

                          অভিমুখ // ভাঙন

দূরে 

ফালি ফালি 

          অস্পষ্ট তরমুজ রঙ আভাআভা //

রক্তপাত

ধমনী ছিঁড়ে      নুনমিঠে

                             পেশি, তন্তু 

চুনসুরকির সাথে        স্বৈরাচারি সাঁতার //

 

পর্দার পেছন 

দাঁড়িয়ে একটা ফুল ফুটে ওঠার  গল্প

ধীর পায়ে অবসিত সন্ধ্যা। কবর খুঁড়িয়েরা

                                        সরে যেতে বলে

পাশ থেকে দেখি তার মুখ। কটাক্ষ অবিকল মুরকন্যা চোখ। কান ঝরায় অগণন তুষার ফুলকবর খুঁড়িয়েরা                           সরে যেতে বলে

 

দেখি

          তার স্থুল কলেবর চূর্ণবিচূর্ণ মুখ 

 

 

 

 

 

 

ডিভাইন কমেডি

 

মৃত মাছের চোখ আমি অথবা বেয়াত্রিচ

স্বাক্ষরের কাঁটাতার পেরোনোর চেয়ে সহজ খুব ফুসফুস বরাবর ঠাসা এ কে ফর্টি সেভেন।

 

দান্তে অথবা তোমাকেই ফরাসি চুম্বন

উড়িয়ে দিয়েছি ভোরের কুয়াশা বাক্সে।

 

আমাদের মাঝে সাইঁত্রিশ সংখ্যক ভীড়বাট্টা।

নিষিদ্ধ চুম্বনের ঠোঁটোগ্রাফে এলো

জেলখানা ফেরত খামহলো কুয়াশাই জয়ী কিংবা অনন্ত মিথ্যে।

 

ডিভাইন কমেডি হাসলো হা হা...!

 

 

 

 

 

সঙ্কোচন-প্রসারণ

 

সম্মুখে দাঁড়িয়ে গতকাল

 

খোসা ছাড়ানো পেঁয়াজের ভঙ্গি

উপমামূলক

অধস্তন সচিব ঝুঁকে আঁকেন ০

 

কাগজের মতো পোড়া ত্বক

খসে পড়ছে অনিয়ন্ত্রিত

বঞ্চিত মুখগুলো চালান

ওপার সীমান্ত

পচাগলা মাংসাশী পাখি

 

আয়না

প্রতিবিম্ব

চালুনি

 

আগামীকাল বিমূর্ততার বাধ্যমঞ্চ

কেন মানুষের অশ্রু হবে মোম

যখন কাঠের পৃথিবী ব্যর্থতায়? 

 

 

 

 

 

অন‌্য অগস্ত্যযাত্রা

 

দশমিক-ভর্তি শরীর উড়ছে হুকখোলা শূন্যের দিকে।

জ্যোৎস্না-গন্ধায় কোন ঐকিক নিয়ম থাকে না

শরীর বগিহীন ট্রেন -

ক্ষিতিজ রেখা বরাবর হুইসেল বাজিয়ে আগমনী সংকেত

জানিয়ে স্টেশনে ঢুকে পড়ছে আরও একটি বিদেহী ট্রেন।

বিষতুতো স্টেশনে নেমে পড়বো ব্রাকেটে বন্দী -

পরজীবী জীবনে তালা আর মরচে ধরা চাবিও মরীচিকা

বাউল শরীর নিয়ে ফিরবো উৎসে অবগুণ্ঠিত গুহামুখে।

 


4 comments:

  1. চমকে উঠলাম। ভালো লাগছে এই ভেবে এখনও ভালো কবিতা লেখা হচ্ছে। অসাধারণ অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। এ কবিতা বারবার পড়তে হয়। অনেক শুভেচ্ছা রইল ❤️

    ReplyDelete
    Replies
    1. অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন। মন্তব্যমুগ্ধ।সমৃদ্ধ ও ঋদ্ধ হলাম। ভালো থাকুন সবসময়। শুভকামনা রইল। ❤️🙏🙏

      Delete
  2. বেশ ভালো লাগলো। নতুনত্বের ছোঁয়া পেলাম। ডিভাইন কমেডি অনবদ্য।

    ReplyDelete
    Replies
    1. অনেক শুভকামনা এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন।

      Delete