দাশায়
কত
ভোরে ওঠে অটম্বর! আজ আরো ভোরে। যেন অন্ধকার ছিঁড়ে ফেঁড়ে অবাধ্য একজন। প্রায় সত্তর বছর ধরে একটা পাহাড় প্রমাণ মানুষ সকাল থেকে দুপুর
আর দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজেকে জানান দিয়ে এল। কেউ
দেখেছে সকাল সকাল একটা কোদাল কাঁধে বেরিয়ে যাচ্ছে সে, দত্তদের কাজে। কেউ
দেখেছে একেবারে ছায়া না পড়া মানুষটা অগোছালো বসে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে, আবার ঘাম তেলতেলে পিঠ পশ্চিমের রোদে এলিয়ে অক্লান্ত
অটম্বর ঘরে ফিরে আসছে। এতদিন দেখে দেখে সবার মুখস্থ, অটম্বরের হাঁটার ভঙ্গি, কোথাও থেমে দাঁড়ানোর ভঙ্গি কিংবা একমাত্র ছেলে দুখাকে ডাকার স্বরখেপ। আগে আগে সন্ধ্যায় তাকে দেখা যেত বাজারের আলোয়, এখন ব্যাটা তাকে বেরোতে দেয় না। দুখার নিষেধে খুশি হয় প্রাণে আর শক্তিতে ভাটা পড়া অটম্বর।
আজ অন্ধকার থেকে উঠে দরজাগোড়ায়
উবু হয়ে বসে আছে অটম্বর। ফিট ফর্সা হয়ে আলো বিছিয়ে গেলে তাকে
পেরিয়ে খামারে নেমে যায় দুখা। সামনেই মোরাম রাস্তা। আদিবাসী পাড়ার ভেতর দিয়ে বাজার অব্দি গেছে।
--দুখা…
--লে ম্যা…
প্রকাশ্য
বিরক্তির ভঙ্গি নিয়ে ফিরে দাঁড়ায় দুখা। সে বুঝে
যায়, আজ তার বাপ তাকে জ্বালিয়ে
মারবে। কাল সন্ধ্যা থেকে লোকটা সেই এক বুলি মুখে
নিয়ে বসে আছে!
"অরা কালকে বেরাবে ত?"
প্রথমটায়
কথাটা শুনে অবাক বনে গিয়েছিল দুখা। কঙ্কাও তার সারাদিনের খাটনি ভুলে গা নাড়া
দিয়েছিল।
--কারা! কুথা বেরাবে!
দুখার
কথায় একটু দমে যায় অটম্বর।
তার
নিজের ছ্যানা বৌমা জানেনি!
কালকে
এত বড় একটা দিন যে!
হলুদ আলোয় কত মুখ চাওয়া চাওয়ি
আর ধাপ কেটে কেটে মরা পুকুর থেকে ঝড়ায় করে মাটি তোলার মত কথাটা বেরোয়--
--কালকে যে দাশায় লাচের দিন!
তিনজনের
সংসারে কথাটা চরে বেড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। সাদা সাদা হাঁসগুলো অস্থির পাখসাট তুলে ছাড় ছেড়ে পালিয়ে গেল
হয়তো। দুখা আর কঙ্কা মাদুর নিলে সময়কে সময়
না দিয়ে হলুদ আলো নিভে যায়।
সেই কাল থেকেই অটম্বর একটা শৈশব হয়ে
আছে। রাতে ঘুমিয়েছিল কিনা জানা নেই। হয়তো ঘুমিয়েছিল,
স্বপ্ন দেখে রাতভোরে উঠেছে। এখন
ঠায় বসে আছে দরজা ঘেরে যেন কেউ বা কিছু তার নজর এড়িয়ে না যেতে পারে। প্রত্যেক পদক্ষেপে সে উৎকর্ণ হয়। এই বুঝি
সবাই দল বেঁধে আসছে!
দুখা মুখটা বেজার করে প্রথমে বাপের
কথাটা বোঝার চেষ্টা করে। বেশি সময় লাগে না। বুঝতে পেরেই রোগা লিকলিকে ছেলেটা বাপের উপর একটা ঝাড় দেখিয়ে
দেয়।
--তোর কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নাই!
বসে
আছে অথচ ঠেস দেওয়ার মত একটা লাঠির কথা ভেবে মিইয়ে যায় অটম্বর। তার ঝাঁকড়া চুলের মাথাটা আস্তে আস্তে নড়তে নড়তে তলিয়ে যায়
পায়ের কাছের মাটির দিকে।
বাপ-ব্যাটার
জন্ম দেওয়া এমন একটা সকাল দেখে বিশেষ বিচলিত হয় না কঙ্কা। এমনভাবেই প্রতি সকাল শুরু হয় তারপর যে যার কাজে। হয় ধান রুইতে কিংবা মাঠের যে কোনো কাজে। আদিবাসী
পাড়ার অন্যদের সঙ্গে দুখা আর কঙ্কাও যায়। ঘরে
একা থাকে অটম্বর। বছর কয়েক আগেও অটম্বর কাজে যেত, বয়সের ভারেও একা একটা লোকের মতই কাজ করত। কিন্তু হঠাৎ করেই লোকটা নুইতে নুইতে মাটির কাছাকাছি চলে আসে। পুরোপুরি ঘর বসা হয়ে যায়।
তারা
বলত,
"মাটি হড়দের শান…"
"কারা বলত!"
কারো
এই প্রশ্নে অটম্বর কেবল পশ্চিমের আকাশের দিকে তাকিয়ে জলপাথর হয়ে যায়।
দুখা কঙ্কা ভালোবাসে অটম্বরকে। যত্ন করে তার বয়সকে। কিন্তু
লোকটার দিন দিন এমন শিশুর মত জেদ আর ছুঁচিবাই মেনে নিতে পারে না তারা। সবসময় দুখার মন মেজাজ ভালো থাকে না, যেমন আজ সকালে কাজের মত সাজে বেরোনোর সময়েই কাল
রাত থেকে টেনে আনার জের তাকে খিটখিটে করে দেয়।
--একদম চুপচাপ ঘরে বসে থাকবি। কোথাউ
বেরাবিনি…
ব'লে হনহন করে
চলে যায় দুখা। যেন বাপ শাসন করে গেল এক অবাধ্য ছেলেকে।
--অ বউ, উ কোথা গেল রে! আজ ত কুনো
কাজ নাই…
আজ
সত্যিই কোনো কাজ নেই। আজ তাদের দুর্গার বিসর্জন। পুজোর মণ্ডপে মণ্ডপে কাপড় আর নকশা আলগা হয়ে আজ খুলে পড়বে। উৎসবের মেজাজে কোনো দিকু ঘরে বা মাঠে এই সময় কাজ করায় না। তারা কাজ করায় না বলেই দুখাদের নিজেদের সকলের আজ কয়েকদিনের ছুটি।
কঙ্কা বাইরটা ঝাঁট দেয়। আরো গাঢ় করে সকাল ডেকে আনে। অটম্বর
সেই যে মাথা নুইয়ে বসে আছে ছাঁচতলে,
ওঠেনি। আর কিছুক্ষণ এমনভাবে বসে থাকলে কাঁথের
দেওয়ালে আঁকা লতার অস্পষ্ট আলপনাগুলো যেন বেয়ে এসে উঠবে অটম্বরের গায়ে। এই সময়ের মধ্যে একবার অন্তত সে মুখ তুললে দেখতে পেত টুকরো খামারে
কঙ্কার ঝাঁটার ধুলোয় লুকানো রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেছে উদয় আর গার্ভু। রাস্তা ধরে তারা গেছে পশ্চিমে, বাজারে। কাজের
সংক্রান্তিতে ঘুরে ঘুরে বাজারে আড্ডা দেওয়া। এই পাড়ার
সবাইই ত এমনই। কাজ আর কাজ সেরে যতটুকু অবসর পায়, মৌজ করে। মদ টানে। কোমর লাচায়। এ নাকি তাদের পূর্বপুরুষকাল থেকে চলে
আসছে।
অটম্বর সেই এক ঘোর আর ঘটা উচিত
এমন একটা কিছু ঘটার আশায় মুখ নুইয়ে আছে। এখনও
শরীরের কুঁচে যাওয়া চামড়া থেকে ভাঁজ উবে যাচ্ছে। বয়স
থেমে গিয়ে আবার পিছু হটতে শুরু করেছে। দুখা তাকে বকে গেল, কঙ্কা তাকে পাত্তা দিচ্ছে না, তবুও সে ভাবছে এখুনি-- এই যেকোনো মুহূর্তে পাড়া থেকে
একটা দল বেরোবে। অটম্বরের চোখের সামনে আসার আগে কানে আসবে
সেই দলের ক্ষীণ ক্ষীণ কান্নার রব। ভেসে আসবে কলসির ভেতর থেকে শূন্যতার শব্দ,
"দেহেলে দেহেলে দেহেলে
দে…"
অটম্বর উঠে দাঁড়াবে। দাঁড়াবেই। কিন্তু বেলার এত বয়স বাড়লেও অটম্বরের
বয়স কমিয়ে দেওয়া সেই সুর আসছে না!
রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায় আরতি। কথায় কথায় সে আটকে যায় কঙ্কার সঙ্গে। অটম্বর
তাদের ভাষায় তাকে কাছে ডাকে। কঙ্কা সেখান থেকে নড়ে না। সে চায় না, অটম্বর আরতিকে এমন কিছু বলুক, যাতে আবার দুখা রেগে যায়। তাছাড়া বুড়া মানুষটার এখন মাথার ঠিক নেই, সেটা তো কেউ বুঝবে না! কী
বলতে কী বলবে আর এক করতে আরেক হয় যাবে! কঙ্কার উপস্থিতিতে কোনো
সংকোচ হয় না অটম্বরের। সে আরতির কাছে জানতে চায়,
--হ্যাঁরে, অরা আজকে বারাবেনি?
--বারাবে বল!
--এখনও ত সময় আছে!
মাথাটা
আবার ঝুঁকে যায় অটম্বরের। সেই সুযোগে কঙ্কা আরতিকে চলে যাওয়ার
ঈশারা করে।
মাথা তুলে আরতিকে না দেখতে পেয়েও
অটম্বর কিছু বলে না।
--অ বউ…
কঙ্কা
একটা জাম বাটিতে হেঁড়িয়া দিয়ে যায়। যেন এটাই চেয়েছিল অটম্বর। চুপ করে খেতে থাকে।
কতগুলো হলুদ হয়ে যাওয়া খীরিষ
পাতা বাতাসে উড়ে এসে খামারে পড়ে। জল আর
মাটিতে এতদিন মুনিষ খাটতে খাটতে বেলা আর আকাশে ঘড়ি দেখে এসেছে অটম্বর। এখনো তার মুখস্থ,
শরৎকালের দলা পাকানো মেঘগুলো রাস্তা ধরে পশ্চিমে বাজারে তারপর আরো পশ্চিমে
কোনো পাহাড়ের দেশে ছুটে যায়। কতদিন আকাশ দেখেনি অটম্বর। একেবার মৃত্যুর আগে যদি দুখা তাকে খামারে শোয়ায়, চিৎ হয়ে দেখবে। আকাশে
তার শুধু মেঘ দেখার আছে। দেখবে, কীভাবে সারা আকাশের টুকরো টুকরো মেঘ ছুটে গিয়ে
জমা হয় পশ্চিমে। ঝিলিক দিয়ে বাজ মারে। তখন চোখ ঝলসে গিয়ে বাজারটাকে আর দেখা যাবে না কিছুক্ষণ।
এখনও অটম্বরের আহার আছে বেশ। সবটুকু হেঁড়িয়া শেষ করে সাদা জলে হাত ধুয়ে নেয়। অর্ধেক জামবাটিতে জল টলমল করছে। ঘোরে
ঘোরে জামটা থেকে যায় তার অস্পষ্ট নুয়ে পড়া দৃষ্টির সামনে।
সে দেখল, টলমল জলের সঙ্গে কোমর নাচিয়ে কতগুলো লোক হলুদ শাড়ি পরে নাচছে। তাদের মুখ ভার। দৃষ্টি নত। হাতে
ধরা আছে মাটির কলসি। কলসি থেকে শব্দ তুলে তারা সমবেত কণ্ঠে
গান গাইছে,
"দেহেলে দেহেলে দেহেলে
দে…"
হয়তো এই একলা অটম্বরকে কেউ দেখল
না। সে নিজেও জানল না। নিজের অজান্তেই মুখে একরাশ প্রসন্নতা নিয়ে মিশে গেল ওই দলটার
সঙ্গে। দলে মিলিত হয়ে গান গাইছে সবাই। টুং টুং পোড়া মাটির শব্দ তাদের মুখ ঝলসে দিচ্ছে যেন। চোখ ছল ছল করছে সবার।
ঘর থেকে ঘর আর রাস্তা হয়ে কোনদিকে
মিলিয়ে গেল লোকগুলো। দৃশ্যের মৃত্যুর পর ক্ষীণ হতে হতে সুর
আর তারপর ভাবনাটা ছেড়ে গেল অটম্বরকে।
কঙ্কা একটু আগে এসে দেখে গেছে,
নেশার চোটে অহেতুক মাথা দোলাচ্ছে দুখার বুড়া বাপটা। কাজের ছুটির দিনে তারাও আজ গলা অব্দি গিলবে। শুধু দুখা ঘরে আসার অপেক্ষা।
--ওই লতা সন্ধ্যাবেলা পূজায় যাবি ত?
পাশের ঘরের লতাকে আবেগেই বলে বসে কথাটা। তারপর কিসের টানে কঙ্কার কথাটা ক্ষয়ে যায়। অটম্বর এইসব সহ্য করে না। বিরক্ত
হয়। কিন্তু হেঁড়িয়া খেয়ে ঝিমাচ্ছে ত লোকটা!
দুখা এখনও ফেরেনি। তার কথা মনেও নেই অটম্বরের। শুধু
দুখা নয়, আসলে একসঙ্গে অনেকগুলো
লোক দল বেঁধে আসবে, এই আশায় ক্রমশ গলে যাচ্ছে সে। সামনে ঝুঁকে চোখগুলো রাস্তার দিকে এগিয়ে দিয়েছে।
বেশিক্ষণ এমনভাবে তাকাতে পারে না। চোখ ভিজে আসে। চোখ ছোটো হয়। অস্পষ্টতা
ছেয়ে যায়। কবে কতদিন আগে তার বাপ দাদুরা পশ্চিমের
পাহাড় আর শক্ত মাটি ছেড়ে সূর্য মুখে করে বেরিয়ে পড়েছিল। বাপ
সুরাই মুর্মু। সাং পাহাড় ওরফে জঙ্গল। ডাহি আর পোতা মিলে বিঘা পাঁচেক। অন্ধকার
ভিজে ঘরে বসে এমন কথা কতবার শুনেছে অটম্বর। দিকু-দের এখানে কাজ আছে। সিজিনে সিজিনে ধান রুয়া,
ধান কাটা। একজন-দুজন আসতে আসতে দল আসে। মাস খানেক কাজ করে আবার চলে যায়।
সুরাই মুর্মুকে এখানে থাকতে
দিয়েছিল মাইতি ঘরের কমল মাইতি। বুঝেছিল, এখানে এনে ওই জলা জায়গাটায় কুঁড়ে বেঁধে থাকতে
দিলে ফি সিজিনে মুনিষের চিন্তা থাকবেনি। সেই
থেকে সুরাই। সুরাইয়ের পেছনে পেছনে গগন মান্ডী আরো
কত...কত। হড়দের পাড়া হল। পাড়ায় জাহের থান উঠল। এখন তাদের রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড।
দুখা যখন ফিরে এল, অটম্বর তখন খামারের এক কোণে বসে আছে খীরিষ গাছের তলায়। সূর্যের পশ্চিমে ঢলে পড়ার আলো এসে পড়েছে তার মুখে।
--ঘরে এসে বুস না…
দুখার
কথায় অটম্বর সাহস পেল। ভাবল, আর একবার কথাটা বলে। কিন্তু কিছু বলল না। যেন
সে কিছু একটা আঁচ করে নিয়েছে। সামনের মোরাম রাস্তাটা দিয়ে সাইকেল আর
পায়ে হাঁটা লোক, অবিরাম অবিন্যস্ত কথা চিৎকার কিছুই ছুঁতে পারছে না অটম্বরকে। এই কয়েক বছর আগে পর্যন্ত দশমীর দিন তার পাড়ার লোকেরা দাশায় নাচতে
যেত, জাহের থানে গড় করে বেরোনোর
পর থেকেই তাদের মুখ নিচু, চোখ ভারী।
অটম্বর বামদিকে তাকিয়ে একবার তার
পড়ে থাকা ছায়াটা দেখে নেয়। স্বভাবের তোড়ে পশ্চিমে তাকিয়ে সূর্যটা
দেখতে গিয়েও সে থেমে গেল। সে তাকাতে পারবে না। আজ অন্তত সে পশ্চিমে তাকাবে না। সূর্য
থাকতে থাকতে ত নয়ই। সামনের বাজারে ওদের পুজো হচ্ছে। মাইকের গান শোনা যাচ্ছে।
-- আজ বেরাবেনি কেউ… আর কুনোদিন নয়…
এই
কথাটা মনে মনে বলতে গিয়ে কঁকিয়ে ওঠে অটম্বর। সেই
লম্বা চাওড়া লোকটা, যার ঘন গোঁফ বাঁক নিয়ে উঠে গিয়েছিল উপরের দিকে। যার কাছে দিকু-দের কাজ ছিল, জাহের থান ছিল, বাপ
দাদু আর পাহাড়ের গল্প ছিল, আর ছিল আজকের এই দিনটা --হুদুড়ের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার দিন। যে অটম্বর সন্ধ্যা-সন্ধ্যি ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাইমণিকে পাশে নিয়ে পিলচু হাড়াম আর পিলচু বুড়হির
জগৎময় ঘুরে বেড়ানোর কথা বলত। বলতে বলতে জল-মাটি ঘাঁটা রাইমণি একদিন দুখা দিল।
সেই দুখা আজ ঘরে। সেই অটম্বর আজ আর ঘরে ফিরতে চাইছে না। দুখাকে
ডাক দিয়ে দিয়ে ছেলেরা চলে যাচ্ছে বাজারের দিকে। আজ শেষ
দিনের আনন্দে দিকু-দের সঙ্গে তারাও মাতবে।
সন্ধ্যা নামে নামে। অটম্বরের পাথর হয়ে যাওয়া শরীরটায় আর যেন নড়াচড়া করার ক্ষমতা
নেই। একটা ফুরফুরে বাতাস তার সারা গায়ে এসে
লাগে। আর তর সইছে না। আস্তে
আস্তে ঘাড়টা তোলে অটম্বর মুর্মু। পশ্চিমে ঘোরায়। দিগন্তের
আকাশে চোখ বুলিয়ে সে একবার যেন কিছু দেখে নিতে চায়। জল চোখের
ঝাপসা দৃষ্টির সামনে দিয়ে দুখা আর কঙ্কা বেরিয়ে যায়। যাওয়ার
সময় কী যেন বলে গেল তারা। অটম্বরের দৃষ্টি তবু পশ্চিম দিকে স্থির। বাজারের কী নিদারুণ আলোর আভা! সেই আলো পেরিয়ে অনেক চেষ্টা করেও অটম্বর পশ্চিম
আকাশ অব্দি চোখ নিয়ে যেতে পারল না।
বেশ ভালো লাগলো। আলাদা স্বাদ। কিছু চিত্রকল্প অসাধারণ। বলার ভঙ্গি চমৎকার।
ReplyDeleteধন্যবাদ দাদা
Deleteছুঁয়ে গেল। খুব ভাল লাগল লেখাটা পড়ে। শুভেচ্ছা জানাই। টানটান লেখা।
ReplyDeleteধন্যবাদ দিদি। প্রণাম নেবেন
ReplyDeleteএকদম অন্য স্বাদের।কয়েকটি শব্দ আমার কাছে নতুন হলেও বাচন ভঙ্গী বুঝিয়ে দিতে পেরেছে।
ReplyDeleteআমার এই ধরণের গল্প খুব ভালো লাগে।লেখককে ধন্যবাদ।
আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
Delete