বাক্‌ ।। বিদিশা সরকারের নির্বাচিত কবিতা


 

জন্ম ২১শে জুলাই। কলকাতা।


প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: যার সঙ্গে থাকি,শূন্যের'মাঝারে, ঈশ্বর গোপনে আসে, ফুল দংশাই, ক্লাসিক বসন্তসেনা,

 পিয়া বাসন্তী রে, হলিডে হোমের চারদিন, নিভন্ত আঁচেই তবে সেরে নিই, কাসেমের ঘরবাড়ি।

ব্যক্তিগত গদ্য আত্মচর্চা। 

উপন্যাস ণ্ডিতা 



 

সমান সমান 



শঙ্কার থেকে মুক্তির বিষয়ে ভাবতে ভাবতে আমার গৃহীপনা পুরো দস্তুর।

অভ্যাসিত সুবিধাগুলো যেন গয়না! অথচ সে পৌঁছে দেবে বলেছে --

যে পৌঁছানোয় ব্রহ্মলাভ। ভাসমান পেঁজা মেঘ! ফানুসের মত হাল্কা পুল্কা

অথবা নিভে যাওয়ার আগে একবার জ্বলে ওঠা। লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম- 'জ্বলছি তো, দেখ সমস্ত ফোস্কাগুলো আসলে গুপ্তজ্বর' -- আর কপালে ছুঁতেই বলল -- সব কিছুই পঞ্জিকা মতে, দিনক্ষণও। রানু দি কখনও এসব বিশ্বাস করেনি। তিন নম্বর গলির শেষ ঘরটায় তার পাঠশালা। আয়নার

সামনে দাঁড়িয়ে দিদিমণি সেজে লাস্ট বেঞ্চকে বরাবরই দাঁড় করিয়ে রাখে

--প্রেম আর প্রতিশোধকে দাঁড়িপাল্লায় সমান সমান 




গ্রুমিং



সময় অতিক্রান্ত। বাক বিতণ্ডার উপচে পড়া ভিড় পেরিয়ে যখন বাইরে এলাম উঠোন সংস্কৃতি গীটার বাজিয়ে কী বলতে চাইছিল তাদের গানে বুঝিনি। এক বন্ধু বলেছিল আমার গ্রুমিং-এর প্রয়োজন। এই তো বেশ আছি। সে আবার বলল গ্রুমিং মানে তার অভিরুচি অনুযায়ী। বানিয়ে তোলা আর বানিয়ে বলার এই দুনিয়ায় সেই হাস্যকর প্রস্তাবে নীরবতাই ছিল পিজি'র মোড় অবধি। বাসের জানলায় বসে হোর্ডিং'এর উচ্চবিত্ত হাতছানিগুলো এই শহরের আত্মা বিষয়ে কতটুকু জানে! ভি.আই.পি'র গাড়ি পার হচ্ছে তাই অ্যাম্বুলেন্স সিগন্যালে দাঁড়িয়ে। মানবাধিকারের ধুয়ো ঢাল নেই তলোয়ার নেই...... তুলনায় সুলভ বাথরুমগুলো বেশ পরিচ্ছন্ন। একেক সময় মনে হয় কয়েকটা চেয়ার সরিয়ে নিয়ে আরেকবার হোক না মিউজিকাল চেয়ার। বন্ধুরা তখন আর বন্ধু থাকবে না বিলক্ষণ। ইভেন্টের বাজারদর অনলাইনে দেখে মধ্যবিত্তের হুজুগগুলো ফ্রি কুপনের লাইনে অপেক্ষা করছে। 


গ্রুমিং !





ক্যাশবাক্স


যাবতীয় ইচ্ছের প্রণামি

ক্যাশবাক্সে কী মুগ্ধ সেলামি!



অশ্বমেধে সেনানী প্রস্তুত

রাষ্ট্রনীতি বড়ই অদ্ভুত!



ষোলআনা পারানি বাবদ

ডুবে গেলে বন্ধুই শ্বাপদ!



শ্বাপদের বুক ঢিপ ঢিপ

সেইসঙ্গে অপ্রস্তুত ছিপ!



টেনে নিল, লেজের ঝাপট

খরাত্রানে জলে নামে বোট!



তন্নতন্ন সে পগারপার

আল ঘেঁষে চলেছে কাহার!



অল্পে রুচি গল্পে বাহাদুরি

নিজে নিজে সে সুখেই পুড়ি!






অসম 



একটা টর্চের আলো যেভাবে পথ খোঁজে 

খানাখন্দয় সতর্ক হতে হতে তুই ঠিকানা পেরিয়ে --- 

আমি সেই সংশয় থেকে তুলে নিচ্ছি আমার তক্তপোশের 

প্রিয় চাদর, ফুলদানির একগুচ্ছ বাক-স্বাধীনতা

স্বল্পায়ুর রুম ফ্রেশনার



বেঁচে থাকার মানে খুঁজতে যখন তুই নেমে পড়েছিস পথে 

আমিও তখন বেঁচে থাকার অন্যমানেতে 

ভাবছি পথ, সম্মেলনের পর একলা ফেরা



এই পথেই বৃষ্টি নামে পৌষের শীতে 

এই পথেই কল্পতরু হয়ে বরদা আমি 

তোকে দরদাম করি 

বহুত মিনতিও



এইভাবেই তো আমাদের শহর গ্রামীতার নিজস্বতায় 

আমাদের ভাষাও ক্রমশ মুদ্রানির্ভর !





নিরিবিলি কথাগুলো

 

 

মাঝরাতের বুক চিরে কয়েকটা বিমান ...

পাশ ফিরে শোয় মোনালিসা



কয়েকটা বিমান বুক চিরে আসন্ন যুদ্ধের

কিছু অতর্কিত মহরায়

রাতকে শাসন করে

ছায়ারা ঘুমায়



নিরিবিলি কথাগুলো

কোনোদিনও প্রকাশ্যে এল না।

তুমিও তো জাগো

তুমিও শুনেছ সব বারুদ ঘটনা



মাঝরাতে সক্রিয় হলে

বিমানসেবিকা ভাসে

টিউলিপ ফোটে



এসবই আন্দাজ

মেসোপটেমিয়া থেকে সভ্যতার খননগুলো বেছে

ইতিহাস ছাপা হয়

তোমার আমার কথা না ।





সমুদ্রের ব্যালকনি থেকে

 

 

কারন আমার ইচ্ছেগুলো সমুদ্র তাড়িত ভেসে আসা একঝাঁক ঝিনুক। সংলগ্ন উপকূলের সন্ন্যাসী কাঁকড়ার অন্তর্ধান রহস্য...

সন্তান সম্ভাবনায় আঁকড়ে রাখা মুক্তো অথবা নুলিয়ার নজর বাঁচিয়ে নির্জন ক্যাসুরিনা মুহুর্ত। আত্মরক্ষার তাগিদ এই কারনে, আমার গর্ভে তোমার সুপ্ত অহংকার।

দাহকার্য শেষ হবার আগেই ওরা ফিরে গেছে। জোয়ারে নিভিয়ে দিল কিছু। সামুদ্রিক ঝড়ে উস্কে দেয় ভাঁটার উত্তাপ। মৃত্যুর আগেই ওরা ফিরে গেছে নিতান্ত পারিবারিক।

গুটিয়ে নিয়েছে জাল রাতের ধীবর। এখন নির্জন। যেন তুমি হেঁটে যাচ্ছ হাওয়াইয়ান গিটার। তোমার গোটানো জিনসে দৃশ্যমান গথিক পয়দল। আমার দুরবীণে হাজার তারার অটোগ্রাফ। তোমার নক্ষত্ররাজি অতীতের সমগ্র রচনাবলী খসে পড়ছে উল্কাপাতে একেক পৃষ্ঠায়।





...বাস্তবিক 

 

 

অপেক্ষা করিনি তোমার পৌঁছসংবাদের ...

অপেক্ষাকে বাতিল করিনি

বাতিল করিনি পরবর্তী অনুষ্ঠানসূচীর দিন ও সময় কে

বাতিল জীবন নিয়ে ডাইরির পাতা ভরাই নি

অনাস্বাদিত ব্যাপক বৃষ্টির একপশলায় তাৎক্ষণিক তুঙ্গ বিষয়ে কোনও প্রশ্ন জাগাইনি মনে

বিড়াল ও বিড়ালনীর সমগোত্রীয় মিলন

তাদের শাবক

শাবক থেকে নখ

আর

তুলোর মত নরম থাবাকে

প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে

পাখির খাঁচা খুলে উড়িয়ে দিয়েছি মৃত পালকগুলিকে

আর

তারা উড়তে পারেনি বলে তাদের পরজন্মের স্বপ্ন দেখাইনি কখনও

শুধু পথীকৃতের ফটো থেকে শুকনো মালা খুলে নিয়ে বলেছি,

মাফ করবেন

টাটকা ভোজবাজির উৎযাপন থেকে সরে এসেছি অনেকদিন ---



প্রাতঃস্মরণীয় শব্দটি একটি বিলুপ্ত শব্দ --

সংঘ ও রাষ্ট্র বিষয়ে আমার জ্ঞান অতি সীমিত




কিছু রং দিও 

 

 

তোমার চোটের অজুহাত থেকে তুলে নিলাম আতর মাখানো রুমাল। কিছু তো থেকেই যায়। যেমন সাবান সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন।

বিজ্ঞাপনের দাম্পত্য থেকে টুকে পাস করা রেবতী নদীটি পদবী মুছে দিয়ে নামসর্বস্ব।

জজকোর্টের সামনে জলের দামে বিক্রি হচ্ছে রুদ্রাক্ষের মালা আর বিবাহ বিচ্ছেদ। প্রত্যেকেই সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত। সম্পর্কের মেয়াদ বিষয়ে। মিশরের পিরামিডের মতন স্মৃতির ফলক থেকে চোখ সরালো দূরবী। তারপর আকাশ বিষয়ে কিছু বলা সমীচীন নয়।আলোর উপলক্ষ্য রাতকে কী অনায়াসে দিন বানিয়ে দেয়। তোমার না জানা র়ংগুলোকেও। তার থেকে কিছু রং দিও। যত্নের লালনে ধুলো পড়ে না। শুধু দেয়াল লিখনের রংগুলো বাদে।



 

এই তরল প্রপাত বিষয়ে 

 

 

এই তরল প্রপাত বিষয়ে ধারাবাহিক হতে হতে 

ঝরনা কলম হলাম

যদিও উপত্যকা বিষয়ে নীরবতা ঊর্দ্ধতনের সদিচ্ছা ।



টুরিস্ট লজের বারান্দায় আলোছায়া

তোমার স্বীকৃত ভেজা তোয়ালের মতো শরীরী আতর 



ক্রমশ অবশ হয়ে যেতে যেতে 

একলা পথগুলো চৌমাথায় দাঁড়িয়ে

বাজারদর বিষয়ে কিছু আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছিল

সেই উৎসমুখ 



দোয়াতের ভিতরে সেই নীল সভ্যতা

ইতিহাসের পাতায়

এখনও খুব রাতে শোনা যায়

বুটের শব্দ

বশ্যতার চাবুকে প্রপাতের মুজরা 



আপাতত ওরা সেই উৎসবমুখর সন্ধানে




ইকেবানা

 

 

ওপেন রেস্তোরাঁ ...

মহামান্য আপনাদের জন্য এখানে মজুত রাখা আছে

ক্ষিদের উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র।

ডেইলি ম্যাগাজিন

প্রিম্যাচিওর্ড অথবা র'...



নেশা দাহ্য বলে সিট ছেড়ে উঠে যাবেন না

কারণ পেশা তারও বেশি -

মাথাপিছু রিসর্টের জন্য

সোলার সিস্টেম

পার্রলার

ইউনিসেক্স

সব সেফ

শুধু ইন্টিরিয়র ডেকোরেশান ও

হর্টিকালচার বিষয়ে বিশদে বলতে পারব না



ওই ক্রিস্টাল নীল জলে যে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন

ছিটকে আসা পাপড়িগুলো জলেও সেন্ট পার্সেন্ট কালার প্রুফ।

শুধু মধ্যরাতের পর ওদের পাদুটো বাদ দিয়ে কর্নার টেবিলে বসিয়ে দেওয়া হয়।



ওয়েটারের টিপস শুল্ক সমেত






অসম 


 

বিরজু আসলে একটা নীল খাতা। পছন্দ করে না কোনো মলাট। সমস্ত প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে গ্যালারি জুড়ে টাঙিয়ে রেখেছিল ইচ্ছে মাফিক বস্ত্র সঙ্কুলান। আমার ইচ্ছে ছিল একটা ঝর্ণা অথবা ঝোরা। যেভাবে সেলুলয়েড জুড়ে আভিজাত্যের নীল, চক্রাকারে শেষ বিকেলের মন্থন আর শরীর পেঁচিয়ে বেয়ে ওঠা ভাস্কর্যের মতো অন্তত কিছুক্ষণ। এই স্থায়িত্ব বিষয়ে কেউ কিছু জানে না। আগ্নেয় লাভায় একটা একটা করে আমার পারিজাত।কী নিঃসীম তার অতল! চুম্বন ছুঁয়ে তার বুকেই অধঃপাত। 



 

পিঠের উপর তার অঙ্কনশৈলী। আধো ঘুমে আয়েস সর্বস্ব সমর্পণ। অথচ বিপরীতমুখী এই আয়োজন একটা চার্জার খুঁজছিল। ফুরসত আর পায়রা ঘরের রকম সকম এক বিদ্যুতেই সেই দুর্ঘটনা। ফাইল দিয়ে আমার নখগুলো ঘষে দিতে দিতে বাতলে দিয়েছিল প্রতি আক্রমনের সহজ পন্থা। অসম সময় দীর্ঘায়িত হলে কোম্পানির ঠেকে বসে থাকতে থাকতে একটা সন্ধ্যা হয়ে ওঠে শচীন কত্তার গান ।



 

সম্পর্কের বিনিয়োগে এঁটো খেতে নেই 



আর কী কী করতে নেই ? 



সচ্চরিত্র বিষয়ে কোনো ফতোয়া না 



আজ রাতে সমস্ত প্রেমিক আর জুভেনাইল কোর্টের গুমঘরে 

জন্ম নেবে প্রাপ্তবয়স্ক কিছু 

গরম জিলিপি 



পুড়ে যাক জিভ 

তবু ব্যবহার শেখো 

যোগ্যস্থানে 

চমন বাহার 



চরিত্র বিষয় নয় 

তিন ডুব দিয়ে এসো 

ধুয়ে যাবে 

আলবাৎ যাবে 



কেক কাটা ফোয়ারা বাগানে 

গরম গরম ফিস রোল





মায়াবয়ান

 

 

উঠোনে নরম রোদের কোমল ধৈবত...

নূপুরের শব্দ থেমে ঠায় দাঁড়িয়ে কোমল ঋ,

পায়ে চপ্পল গলিয়ে বেরিয়ে গেলেন মাস্টারমশাই,

কুয়াশায় বাকিটুকু অনুমানের বিলম্বিত জোড়া দীঘি।



তার কাছে সকালের মানে রচনা 

আল ঘেষা সাইকেলের পথ

দক্ষিণাবর্তের নিরুদ্দেশ

নিয়তি যদিও পিছু ছাড়েনি

স্থায়ী অস্থায়ীর দোলাচলে

মুখরায় ফিরে আসছে ভৈঁরো



ফিরে আসছেন মাস্টারমশাই

সম থেকে সমেই



গান্ধর্বী মতেই এবার নাহয়

বাজুবন্ধের দোষ নেই কোনও।





টি-টোয়েন্টি

 

 

ক্রমশ প্রকট শিরা- উপশিরা।

শেষ কবে সিঁদুরে মেঘের ভয়ে অঘোষিত

একশো চুয়াল্লিশ ধারা

শেষ কবে হৃদপিণ্ড থেমেছিল

তারপর জেনারেটারেই

আবার সচল হোলো অচল আধুলী



আবার প্রকট হচ্ছে রগে রগে দাপাদাপি

বন্ধ সব পথ

এসেছ যখন কিছু সুরাহা তো বলো

শেষ কবে টি টোয়েন্টি

একে চন্দ্র

দুইয়ে পক্ষ

দুরন্ত সিক্সার



ক্রমশ জন্মাচ্ছে সব বিরুদ্ধবাদীর ত্রাস

ট্রিগারে হবে না



বেলুন যেমন প্রচণ্ড শব্দের পরে

ঠিক সেভাবেই

তোমার হিম্মৎ জানা আছে



আকুপাংচার নয়

শুধু একটা সূচ ---

অসম্ভব তোড়ে তুমি ভিজে যাচ্ছ হাইনেক

ডুবে যাচ্ছে পালঙ্ক কাহিনি



এবার ঘুমাবো আমি

পালাও পালাও সাবধানী





একটা নদী, আর

 

 

সে এখন নদীর কবিতা লিখছে

আর আমি পথের --

পাশাপাশি ভাবনাগুলো দূরত্বকে মুছে দিচ্ছে

সে এখন নদী,

ক্রমশ স্বচ্ছ হচ্ছে দৃষ্টিপথ

সে এখন পথ।

পথের সীমান্ত নিয়ে কিছু কথা

ভাবনারা সমান্তরাল --

আমার বহতা নিয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ছি

পথ কিন্তু কুয়াশাপ্রবণ

তুমিও তো আধখানা নিয়ে নিলে

ছিঁড়ো না, এসব ই কবিতা আমার ---

চোখ বুজে জেগে থাকে

একটা নদী

বহতা শহর !

 



আমি তো চলছিই

 

 

হয়তো আর নদীর সম্ভাবনা নেই ...

গাছগুলো ক্রমশ বামন

ছোট হতে হতে আমিও জেনেছি

হাওয়াই চপ্পল টেঁকসই হলে

কয়েকটা বর্ষা বেশ মাপসই ব্যবহৃত হতে হতে হতে


তুমি তো কৃপণ নও

শ্বাসকষ্ট হলে হাওয়া বদলের কথা বলো

চলো চলো


আমি তো চলছিই

ফ্রোজেন সোল্ডার নিয়ে

অথবা ঢুলুনি --

চালান ছাড়াই স্বপ্নেরা ঢুকে পড়ছে,

সমস্ত বার --



বাতাসের ধাক্কা খেয়ে দেয়ালের নীরবতা

বারুদের সম্ভাবনা ভেবে

কে যেন নদীর দেশে পাঠাচ্ছে খবর


ভাঙা সাঁকো

আর

হাইড্রেন

ফুটপাত হয়ে গেল কবে !





রবিশস্য 

 

 

পাখি আসবে না ভেবে 

বেচে দিলে হরিয়ালি খেত 

অথচ পাখালির শব্দে ঘুম ভাঙে অসফল ভোরে 

স্বপ্নের শতাব্দী কোনো স্টেশনে থামে না 

কখন পৌঁছে যায় রাজধানী 



মম তাজমহলের 

কারুকার্য বাটালি ছেনির উপঢৌকনে 

ঘুমায় কবরে 



পাখি আসবে না ভেবে রামগিরি দুরবীণে 

জরিপের চোখ 

সুবহের সু্র্মা মোছা রুমাল লুকিয়ে

হরিয়ালি কিনতে যাও আবার আবার 



একবার নিয়ে যেও 

রবিশস্য ছড়িয়ে জমিতে 



লাঙল ও হলাহলে 

এখনও সক্ষম 

 

 

 

 

এসকর্ট সার্ভিস

 

 

ইন্টারকম দিয়ে ঢুকে পড়ল শিস্

আর্দালি ঢুকতে পারছিল না 

তার পোশাকটার ভিতরে ভিক্ষাবৃত্তি 

সে নিজেও জানে 

যেমন ভাবে বুঝতে পারা যায়

ঘরে ফেরার আগে আসল কথাটা নকল মানুষের কার্টুন হিসেবে 

সমস্ত বৈসাদৃশ্য 

রুম নাম্বার 

অসতর্ক পারফিউম 



ইন্টারকম দিয়ে ঢুকে পড়ল Vat 69 

রুমের ভেতর থেকে বাইরের দৃশ্যের শব্দরা খুব জরুরি নয়



ইন্টারকম দিয়ে একটা চুম্বনের শব্দ 

রাবেয়া এখন মেসিন ব্যবহার করে না 

একটা রুম নাম্বারে ডায়াল করলেই 

মানি ট্রান্সফার

 


2 comments:

  1. আমাদের অপেক্ষাগুলি বহতা হয়ে যায়। সেই বহতার পলিমাটিতেই জন্ম নেয় কিছু উদ্ভিদ। আর আমরা জীবনকে নদী হতে দেখি। প্রেমে পুড়ে যাওয়া একটা জীবন তবু শেষ হয়ে যায় না। বহু জীবনের সমন্বয়ী স্রোত নিয়ে চিরদিন বিরাজ করে। সেই চিরন্তন কবিতাকেই খুঁজে পাই বিদিশা সরকারের মধ্যে। ভীষণ ভালো লাগলো তাঁর মগ্ন উচ্চারণ:
    "সে এখন নদীর কবিতা লিখছে
    আর আমি পথের --
    পাশাপাশি ভাবনাগুলো দূরত্বকে মুছে দিচ্ছে
    সে এখন নদী,
    ক্রমশ স্বচ্ছ হচ্ছে দৃষ্টিপথ
    সে এখন পথ।
    পথের সীমান্ত নিয়ে কিছু কথা
    ভাবনারা সমান্তরাল --
    আমার বহতা নিয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ছি
    পথ কিন্তু কুয়াশাপ্রবণ
    তুমিও তো আধখানা নিয়ে নিলে
    ছিঁড়ো না, এসব ই কবিতা আমার ---
    চোখ বুজে জেগে থাকে
    একটা নদী
    বহতা শহর !"

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ 💐

      Delete